Tuesday

পরিবেশ বাঁচিয়ে চন্দননগর আমোদিত করল জগদ্ধাত্রী উৎসব

প্রতিমা - কথাটা নাকি এসেছে 'প্রতিম' থেকে। মানে অনুরূপ। অন্তত, ভাববাদীরা অনেকেই তা বলেন।সাধকের চিত্তে উপাস্যের যে রূপ ভেসে আসে, তারই প্রকাশ নাকি প্রতিমা। সে রূপে কখনও তিনি দুর্গা, কখনও কালী, কখনও বা জগদ্ধাত্রী। সবাই যে একথা মানেন,তা নয়। কিন্তু ভাবের বাইরে পূজাকে ঘিরে সামাজিক ভাবে যে আনন্দধারা বয়, তার অনন্য নজির রেখে চলেছে হুগলীর  চন্দননগর। যা একদা ফরাসীদের উপনিবেশ ছিল।কলকাতার মতই এখানে আছে বড়বাজার, বাগবাজার, বৌবাজার ইত্যাদি। প্রতিবছর জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় এলাকাটা উৎসবের চেহারা নেয়। 

এবার প্রায় ১৪২টি পুজো হয়েছে। বাগবাজার বারোয়ারি-র পুজো এবার ১৭৬ বছরে পড়ল বলে আয়োজকদের দাবি। লক্ষীগঞ্জের চাউলপট্টীর পুজার কৌলিন্যে অমলিন। বাগবাজার, ফটকগোড়া, মধ্যাঞ্চল - সবখানেই থিমের নির্মান মানুষকে অবাক করে। অনিবার্যভাবে যেমন এসেছেন রবীন্দ্রনাথ, তেমনই অতল সমুদ্রের গহন উঠে এসেছে স্থলের মণ্ডপে। পথে, পথে চন্দননগরের ভুবনজয়ী আলোকমালা। কিংবদন্তী আলোকশিল্পী শ্রীধর দাসের উত্তরসূরীরাও পাল্লা দিয়েছেন সমানে।

বাড়ির পুজোগুলোও স্নিগ্ধতায় টানে।দশমীর দিনে সারি দিয়ে পথ পরিক্রমা শেষে বাড়ির পূজাগুলির নিরঞ্জন হলেও বেশীরভাগ বারোয়ারী উদ্যোগের প্রতিমা আবার মন্ডপে ফিরে আসে। পরদিন সকালে হবে বিসর্জন।আর সেখানেই বিশিষ্টতা চন্দননগরের। গঙ্গা যাতে নতুন করে দূষিত না হয়, গত কয়েক বছর ধরে সে কথা মনে রাখছেন সকলে। জলে নিমজ্জিত হবার পর, কাঠামো, খড়, প্রতিমার উপকরন- সবই তুলে আনা হচ্ছে জল থেকে। তুলে এনে, সেই কাঠামোয় পুজো চলে সারা বছর।

এবার পরিবেশপ্রেমীরা সবাইকে সহমত করাতে পেরেছেন অনন্য আরেকটি বিষয়ে। শিল্পীরা এবার প্রতিমা রং করেছেন 'লেড ফ্রি' বা সীসা রহিত রং দিয়ে। ফলে পরিবেশ রক্ষায় আরেকটি নজির হল।

এত বিশাল আয়োজনে প্রশাসন ছিল জাগ্রত এবং সংহত। মহকুমা প্রশাসনের সঙ্গে আরক্ষা, অগ্নি নির্বাপন দপ্তর ছিল অতন্দ্র।প্রশাসনিক দক্ষতার কথা ফিরেছে মানুষের মুখে। ফ্রেঞ্চ ইন্সটিটিউটে হুগলী জেলা পরিষদ, জেলা গ্রামোন্নয়ন দপ্তর এবং মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত রবীন্দ্রনাথের পল্লীচিন্তা বিষয়ক প্রদর্শনী দেখতে দেখতে মুগ্ধ মানুষের আলোচনায় উঠে এসেছে সে কথা।

প্রতিবেদক - মুনমুন হোড় সিনহা। 

 # Please download AVRO Bengali font from 'Useful Links' to avoid difficulty in seeing the report properly.

No comments:

Post a Comment